হাসি , গুরুচন্ডালের গৌরচন্দ্রিকা , ডা. মোশতাক আহমদ
[ হাসি,গুরুচন্ডালের গৌরচন্দ্রিকা , ডা. মোশতাক আহমদ ]
হাসুন। হাসিতে হাসিতে কুটিপাটি হউন। ইহা গবেষণা ঘারা প্রমাণিত হইয়াছে যে, মানব স্বাস্থ্যের জন্যে দিলখোলা হাসি টনিকের ন্যায় ফলদায়ক। সুতরাং, দিল হইতে দীত কেলাইয়া, মুখ টিপিয়া, সশব্দে কিংবা নিঃশব্দে; দাড়াইয়া কিংবা বসিয়া,
অবশ্য কাহাদিগকে কী সব বলিতেছি, এই জাতি আর কিছু পারুক না পারুক প্রাণ খুলিয়া হাসিতে পারে, ইহা সকলেরই জানা । কলার খোসায় পা পিছলাইয়া পড়িয়া গেলে যিনি পড়িয়া গেলেন বেশি ব্যথা না পাইলে তিনি যেমন হাসেন-আশেপাশের সকলে তাহাকে মদদ করিবার পূর্বে একচোট অবশ্যই হাসিয়া লয়।
৮৮ সালের বন্যার সময় একমেবাদ্বিতীয়ম BTV তে প্রতিনিয়ত দেখাইতো যে, লে. জে. হু. মু এরশাদ সাফারি পরিয়া সানগ্রাস লাগাইয়া অতি বিমর্ষ মুখ করিয়া হাটু পানিতে হাটিয়া সচক্ষে জনতার দুদর্শা দেখিতে বাহির হইয়াছেন। পিছনে বাজিতেছে তাহার রচিত এন্ড্র কিশোর গীত “তোমাদের পাশে এসে বিপদের সাথী হতে আজকের চেষ্টা আমার'।
আমরা দেখিতাম কলার ভেলায়,ভাংগা নায়ে, টিনের চালে আন্ডা বাচ্চা, মোরগ-মুরগি, ছাগল,হাস ইত্যাদির সহিত ঘটিবাটি, কাথা কম্বলের জংগলে বসিয়াও মানুষ তাহার দিকে চাহিয়া হাসিতেছে--এই চরম সংকটেও তাহারা কেলাইতে ভোলে নাই।
আমি তাই এই জাতি লইয়া খুব একটা নিরাশ নহি। তবে ইদানীং কিঞ্চিত চিন্তায় পাইয়াছে এইজন্যে যে, হলমার্কের এমডি, ডেসটিনির হর্তাকর্তা, সোনালী ব্যাংকের হোমরাচোমরা, হালের মশিউর সাহেব, শেয়ার মার্কেট কেলেংকারীর কথিত বড় কর্তা সকলের কেলানো হাসিই দেখিলাম । কিন্ত কোথাও না কোথাও কোনো না কোনোভাবে উনাদের কাহারও কাহারও দায়ে লাখো পথে বসা কিংবা শুইয়া পড়া জনগণের হাসিটি কোনো চ্যানেলেই যে দেখিলাম না। নিশ্চিত, দেশে শুধু BTV থাকিলে আমি উহাও দেখিতে
পাইতাম । আমাকে খামোখা দুশ্চিন্তা করিতে হইতো না।