অন্যায় যুক্তি , গুরুচন্ডালের গৌরচন্দ্রিকা , ডা. মোশতাক আহমদ

অন্যায় যুক্তি

[ অন্যায় যুক্তি,গুরুচন্ডালের গৌরচন্দ্রিকা , ডা. মোশতাক আহমদ ]


লিখিবো কি লিখিবো না ?  এই দোলাচলে অনেক্ষণ দোল খাইয়া অবশেষে স্থির করিলাম, যতোটুকু সংবাদে প্রকাশ অন্তত ততো টুকুর উপর লিখা যায় এবং সচেতন পাঠক হিসাবে লিখাও সমীচিন। বিষয়টি হইলো, মার্কিন মুুল্লুকে বংগপুঙ্গবের ইসলামী জোশাক্রান্ত হইয়া ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক উড়াইবার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ইচ্ছা হইয়াছিলো। এক্ষণে একটি নাটকীয় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে নাটক মঞ্চস্থ করিয়া অনেকটা “এমটিভি বকরা' বা “কোডাক ক্যামেরা' স্টাইলে তাহাকে গ্রেফতার করা হইয়াছে। 


বিভিন্ন সংবাদ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রায় বালক বঙ্গ সস্তানটির অন্তরস্থিত ওই রূপ ইচ্ছা যদিবা মৃদু আকারে থাকিয়াও ছিলো তাহাতে সুচতুর পরিকল্পনা ছারা উৎসাহিত করিয়া মনের মধ্যে স্ফুলিঙ্গ হইতে দাবানল প্রস্তুত করাইয়া এবং প্রচুর ডলার ব্যয়ে ওই দাবানলে বিশুদ্ধ ঘি ঢালিয়া তাতাইয়া তুলিয়া সকলের সম্মুখে রাষ্ট্রযন্ত্রই হোসপাইপ ও পানির ফোয়ারা লইয়া আসিয়া তাহাকে গ্রেফতার করাইয়া দিলো । যেন প্রমাণ করিলো হে জগত চাহিয়া দেখ, তোমাদিগকে কতো বড় বিপদ হইতে উদ্ধার করিলাম। 


সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া একটি কিঞিৎ অশ্লীল কৌতুক বলিবার লোড সামলানো গেলো না। একবার এক বাড়িতে হানা দিয়া পুলিশ বাড়ির একটি কক্ষে জাল টাকা ছাপাইবার মেশিন পাইয়া ওই বাড়ির কর্তাকে বলিলো এই মেশিনটি আপনার বাড়িতে পাওয়া গিয়াছে। সুতরাং, আপনাকে জাল টাকা ছাপানোর অপরাধে গ্রেপ্তার করা হইলো । 


লোকটি বলিলো কোনো জাল টাকা পাইয়াছেন কি? উত্তর আসিলো না। যতোই বলে ভাই ইহা আমার নহে, ভাড়াটিয়ার, ততোই পুলিশ বলে যে, আমরা অন্য কাহাকেও তো পাইলাম না । ইহা আপনার বাড়ি এবং এটি জাল টাকা ছাপানোর মেশিন। টাকা ছাপানো হইয়াছে কি হয় নাই তাহা প্রযোজ্য নহে। মেশিনটি আপনার কাছে আছে। সুতরাং সম্ভাব্য জাল টাকা ছাপানোর অপরাধ পরিকল্পনার জন্যে আপনাকে গ্রেফতার করা হইলো । 


এইবার লোকটি বলিলো, ভাই এই যদি আপনাদের যুক্তি হয় তাহা হইলে আমাকে ধর্ষণের অপরাধেও ধরুন । 


অবাক পুলিশ বলিলো, আপনি আবার কখন কাহাকে ধর্ষণ করিলেন? লোকটি বলিলো, এখনো কাহাকেও ধর্ষণ করি নাই, তবে উক্ত অপরাধ করিবার মতো যন্ত্রটি যে বিধাতা আমাকে দিয়াছেন এবং আমার সঙ্গেই উহা আছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url